প্রথম খেলায় সেনেগালের বিপক্ষে ঘাম ঝরানো জয় পেলেও ইকুয়েডরের সঙ্গে এসে আর পেরে উঠল না নেদারল্যান্ডস। গ্রুপপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় খেলায় ১-১ গোলের ড্র নিয়েই লুইস ফন গালের দলকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
এ গ্রুপে দুই ম্যাচে এক জয় ও এক ড্রয়ে সমান চার পয়েন্ট পেয়েছে নেদারল্যান্ডস ও ইকুয়েডর। গোল ব্যবধানেও তারা সমানে সমান। তিন গোল দেয়ার বিপরীতে একটি হজম করেছে। এ গ্রুপে দল দুটি তাই একসাথে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে।
একই দিন হওয়া আগের খেলায় কাতারকে ২-০ গোলে হারানো সেনেগাল ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার দৌড়ে টিকে আছে। দুই ম্যাচ হেরে কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে।
শুক্রবার খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে হওয়া খেলায় ষষ্ঠ মিনিটেই লিড পায় নেদারল্যান্ডস। ডেভি ক্ল্যাসেনের ব্যাক হিলে বল পেয়েই বাঁ পায়ের দূরপাল্লার শটে লক্ষ্যভেদ করেন মিডফিল্ডার কোডি গ্যাকপো।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক আক্রমণ করে খেলায় ফেরার জন্য মরিয়া হয় ইকুয়েডর। ৩২ মিনিটে মাইকেল এস্ত্রাদার পাসে বল পাওয়া এনার ভ্যালেন্সিয়ার দূরপাল্লার শট নেন। ডাচ গোলরক্ষক আন্দ্রিস নোপের্ট দারুণভাবে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন।
যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে অ্যাঞ্জেলো প্রিসিয়াদোর কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে ইকুয়েডরকে আনন্দে ভাসান পারভিস এস্তুপিনান। তবে আনন্দ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি অফসাইডের সংকেত দিয়ে গোল বাতিল করেন। এক গোলে এগিয়ে থেকে কমলা বাহিনী বিরতিতে যায়।
৪৯ মিনিটে ইকুয়েডরের ভাগ্য সহায় হয়। গঞ্জালো প্লাটার পাসে বল নিয়ে এস্তুপিনান বাঁ পায়ে শট নিলেও দক্ষতার সঙ্গে পা দিয়ে প্রতিহত করেছিলেন নোপের্ট। ফিরতি বলে গোলমুখে দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যালেন্সিয়া নিশানাভেদ করে ম্যাচে সমতা টানেন।
কাতার বিশ্বকাপে তিনবার লক্ষ্যভেদ করে এখন অব্দি সর্বাধিক গোলদাতা এনার ভ্যালেন্সিয়া। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে তার মোট গোল সংখ্যা ছয়।
কিংবদন্তি ইউসেবিও, পাওলো রসি এবং ওলেগ সালেঙ্কোর পাশে ভ্যালেন্সিয়া লিখিয়েছেন নিজের নাম। বিশ্বকাপে এই তিন ফুটবলারের পর জাতীয় দলের টানা ছয় গোল করা ফুটবলার হয়ে গেলেন ইকুয়েডর অধিনায়ক।
১৯৬৬ বিশ্বকাপে পর্তুগালের হয়ে ইউসেবিও টানা ছয় গোল করা প্রথম ফুটবলার। ১৯৮২ সালে ইতালির বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক রসি এ কীর্তি গড়েন। রাশিয়ার হয়ে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে সালেঙ্কোও এই কৃতিত্ব দেখান। তাদের পর ২০১৪ ও ২০২২ বিশ্বকাপ খেলা ভ্যালেন্সিয়া জাতীয় দলের হয়ে টানা গোল করা খেলোয়াড়।
দশ মিনিট পর নিশ্চিত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ইকুয়েডর। প্রিসিয়াদোর কাছ থেকে বল নিয়ে বাঁ পায়ে দুরন্ত শয় নেন প্লাটা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বল পোস্টে লেগে ফিরে যায়।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন ভ্যালেন্সিয়া। পরে মেডিকেল স্টাফদের সহায়তায় বেঞ্চে বসেন।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে নোপের্টের ভুলে গোল খেতে বসেছিল ডাচরা। তার কাছে যাওয়া বল বিপদমুক্ত করতে বিলম্ব করার সুযোগে কেভিন রদ্রিগুয়েজ তাকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। তার কিকে বল পাশের জালে লাগে। তাই ড্র নিয়েই দু দলকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।